স্বদেশ ডেস্ক:
প্রথম স্ত্রীর সাথে ছাড়াছাড়ি হওয়ার পর দ্বিতীয় বিয়ে করেও সংসার করতে না পেরে ফেসবুকে ’সরি’ লিখে আত্মহত্যা করেছেন অন্তর হুসাইন জারিফ (২৫) নামে এক যুবক।
বুধবার সকালে ফরিদপুরের সালথা উপজেলার ভাওয়াল ইউনিয়নের মধ্যপাড়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
নিহত জারিফ ওই গ্রামের ব্যবসায়ী মো: হুমায়ুন কবিরের একমাত্র ছেলে। এসএসসি পাশ করে সালথা কলেজে ভর্তি হলেও পড়াশোনায় এগুতে না পেরে জারিফ বাবার জুতা-স্যান্ডেলের ব্যবসা দেখাশোনা করতেন।
এর আগে গত ৩০ ডিসেম্বরও সে এভাবে ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করলে তাকে ফিরিয়ে আনা হয়।
জানা গেছে, বাড়িতে জারিফ একা একটি ঘরে ঘুমাতেন। মঙ্গলবার দিবাগত গভীর রাতে তিনি ফসবুক ’সরি?’ লিখে একটি পোস্ট দেন। এরপর বুধবার ভোর সাড় ৫টার দিকে গলায় ওড়না পেঁচিয়ে ঘরের আড়ার সাথে ফাঁস দেন তিনি। পরে পরিবারের লোকজন টের পেয়ে
ঘরের দরজা ভেঙ্গে ভেতরে ঢুকে ঝুলন্ত অবস্থায় তাকে দেখতে পেয়ে নিচে নামিয়ে আনেন। ততক্ষণে অন্তর হুসাইন জারিফ মারা যান।
তার চাচাত ভাই আবুল হাসান জানান, কয়েক বছর আগে জারিফ প্রথম বিয়ে করেন। তবে দাম্পত্য কলহের কারণে স্ত্রীকে তালাক দেন। পরে ফরিদপুর শহরের একটি মেয়ের সাথে গোপনে তার দ্বিতীয় বিয় হয়। দুই মাস আগে পরের স্ত্রীর সাথেও তার ছাড়াছাড়ি হয়ে যায়।
তিনি বলেন, এরপর থেকে হাতাশায় নিমজ্জিত জারিফ গত ৩০ ডিসম্বর রাত ১টার দিকে আত্মহত্যাকে সমর্থন করে ফেসবুকে পোস্ট দিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন। তখন আমরা ওকে অনেক বুঝিয়ে ফিরিয়ে আনি।
স্থানীয়রা জানান, জারিফ পড়াশোনা বাদ দিয়ে বাবার জুতা-স্যান্ডেলের ব্যবসায় জড়িত হলেও ওই ব্যবসা এখন নেই। বেকার হয়ে তিনি মাদকাসক্ত হয়ে পড়েন। এরপর পারিবারিক কলহের কারণে স্বাভাবিক জীবন থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যান ক্রমেই।
ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে সালথা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো: শেখ সাদিক বলেন, দুই মাস আগে স্ত্রী ডিভোর্স দিয়ে চলে যাওয়ায় হতাশাগ্রস্ত ছিলেন জারিফ। এই কারণ তিনি আত্মহত্যা করেছন বলে জানতে পেরেছি। খবর পেয়ে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। এ বিষয়ে আইনি ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।
ফেসবুকে স্ট্যাটাসে নানা কথার মাঝে জারিফ লিখেছিলেন, ‘মানুষ কখন আত্মহত্যা করে? যখন প্যানিক, অ্যাডিকশন, ডিপ্রেশন, স্ট্রেস একসাথে এসে আপনার মাথা খালি করে দেয়। শরীর অনবরত কাঁপতে থাকে। চোখে সব ঝাপসা লাগতে থাকে। মাথা প্রচণ্ড ভারি হয়ে থাকে। একসাথ লাখ লাখ কোটি কোটি জিনিস মাথায় এসে আবার একসাথে চলে যায়।’
তিনি লিখেছেন, ‘প্রতি সেকেন্ডে এমন হতে থাকে। ওই সময় কোনটা ঠিক, কোনটা ঠিক না, এটা বোঝার ক্ষমতা থাকে না। এটা বোঝার ক্ষমতা থাকলে কেউ শখের বশে নিজেকে শেষ করত না।’